Aller au contenu principal

প্যারিস


প্যারিস


প্যারিস বা স্থানীয় ফরাসি ভাষায় পারি (ফরাসি: paʁi; ) পশ্চিম ইউরোপের রাষ্ট্র ফ্রান্সের রাজধানী ও সর্বাধিক জনবহুল নগরী। ভৌগোলিকভাবে শহরটি ফ্রান্সের উত্তরভাগে ইল-দ্য-ফ্রঁস রেজিওঁ বা প্রশাসনিক অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে সেন নদীর দুই তীর জুড়ে অবস্থিত। ২০২৩ সালের ১লা জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত সরকারি প্রাক্কলন অনুযায়ী মূল প্যারিস শহরের জনসংখ্যা ২১ লক্ষের কিছু বেশি। শহরটির আয়তন প্রায় ১০৫ বর্গকিলোমিটার। ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী প্যারিস ইউরোপীয় ইউনিয়নের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল শহর এবং বিশ্বের ৩০তম সর্বাধিক জনঘনত্ববিশিষ্ট শহর

দুই হাজার বছরেরও বেশি ঐতিহ্যের অধিকারী এই নগরীটি ১৭শ শতক থেকে অর্থসংস্থান, রাজনীতি, কূটনীতি, বাণিজ্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা, বিনোদন, গণমাধ্যম, বেশভূষাশৈলী, উচ্চমার্গীয় রন্ধনকলা, বিজ্ঞান ও শিল্পকলা - সবদিক থেকে বিশ্বে ব্যাপক গুরুত্ব ও প্রভাব বিস্তার করে একটি অন্যতম বিশ্বনগরীর মর্যাদা লাভ করেছে। শিল্পকলা ও বিজ্ঞানে নেতৃত্বদানের পাশাপাশি সমগ্র শহরব্যাপী সড়কে বিজলিবাতির ব্যবস্থা বাস্তবায়নকারী প্রথম বৃহৎ শহর হবার সুবাদে এটি ১৯শ শতকে "আলোর শহর" হিসেবে খ্যাতি লাভ করে।

প্রশাসনিক সীমানা ছাড়িয়ে প্যারিসকে কেন্দ্র করে অবিচ্ছিন্নভাবে একটি সু-বৃহৎ নগর এলাকা গড়ে উঠেছে, যা প্যারিস "নগর এলাকা" (unité urbaine উ্যনিতে উ্যর্বেন) নামে পরিচিত। ইল-দ্য-ফ্রঁস অঞ্চলটিতে ১ কোটি ২২ লক্ষ ৭১ হাজারেরও বেশি অধিবাসীর বাস, যা ফ্রান্সের জনসংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। ২০২১ সালে বৃহত্তর প্যারিস অঞ্চলটির স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ছিল ১ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের কিছু বেশি (ক্রয়ক্ষমতার সমতা), যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের এরূপ পৌর অঞ্চলগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ। ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট-এর ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ("ইকোমিস্ট গোয়েন্দাগিরি কেন্দ্র") প্রতিবেদন অনুযায়ী প্যারিসের জীবনযাত্রার ব্যয় বিশ্বের ৯ম সর্বোচ্চ। প্যারিস একটি প্রধান রেল, সড়ক ও বিমান যোগাযোগ কেন্দ্র, যাকে দুইটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সেবা প্রদান করছে। একটি হল শার্ল দ্য গোল বিমানবন্দর (ইউরোপের তৃতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর) এবং অর্লি বিমানবন্দর। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে চালু হয় শহরের পাতালরেল ব্যবস্থা, যার নাম পারি মেত্রো; এটি প্রতিদিন ৫২ লক্ষেরও বেশি যাত্রীকে সেবাদান করে। এটি মস্কো মেট্রো-র পরে ইউরোপ মহাদেশের দ্বিতীয় ব্যস্ততম পাতালরেল ব্যবস্থা। প্যারিসের গার দ্যু নর রেলস্টেশনটি বিশ্বের ২৪তম ব্যস্ততম রেলস্টেশন, যেখানে প্রথম ২৩টি ব্যস্ততম স্টেশন জাপানে অবস্থিত; এটি ২০১৫ সালে ২ কোটি ৬২ লক্ষ যাত্রীকে সেবাদান করেছিল। প্যারিস বিশ্বের সবচেয়ে টেকসই পরিবহ্ন ব্যবস্থাগুলির একটির অধিকারী; টেকসই পরিবহন পুরস্কার বিজয়ী বিশ্বের দুইটি মাত্র শহরের একটি হল প্যারিস। প্যারিসের জাদুঘর ও দর্শনীয় স্থাপত্যশৈলীর ভবন ও স্থাপনাগুলি বিশ্ববিদিত। লুভ্র জাদুঘরে ২০২৩ সালে প্রায় ৯ কোটি দর্শনার্থী বেড়াতে এসেছিল, ফলে এটি বিশ্বের সর্বাধিক পরিদর্শিত শিল্পকলা জাদুঘর। অর্সে জাদুঘর (ম্যুজে দর্সে), ম্যুজে মারমোতঁ মোনে এবং ম্যুজে দ্য লোরঁজরি ফরাসি অন্তর্মুদ্রাবাদী শিল্পকলার সংগ্রহের জন্য উল্লেখ্য। অন্যদিকে পোঁপিদু কেন্দ্রতে অবস্থিত ম্যুজে নাসিওনাল দার মোদের্ন, ম্যুজে রোদাঁ ও ম্যুজে পিকাসো আধুনিক ও সমসাময়িক শিল্পকলার সংগ্রহের জন্য সুবিদিত। প্যারিস শহরের কেন্দ্রে সেন নদীর পাড় ঘেঁষে অবস্থিত ঐতিহাসিক এলাকাটিকে ১৯৯১ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেওয়া হয়।

প্যারিসে ফ্রান্সের প্রধান প্রধান কোম্পানিরগুলির প্রায় অর্ধেক সংখ্যকের সদর দপ্তর অবস্থিত। বিশ্বের বৃহত্তম ১০০টি কোম্পানির ১৫টির সদর দপ্তরের অবস্থান এই প্যারিসেই।। প্যারিসে ইউনেস্কোসহ একাধিক জাতিসংঘ সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা, ওইসিডি উন্নয়ন কেন্দ্র, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স, অনানুষ্ঠানিক প্যারিস ক্লাব, আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ কার্যালয়, আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংঘ এবং অনেকগুলি ইউরোপীয় সংস্থা যেমন ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা, ইউরোপীয় ব্যাংকিং কর্তৃপক্ষ এবং ইউরোপীয় জামানতপত্র ও বাজার কর্তৃপক্ষ, ইত্যাদির প্রধান কার্যালয়গুলি অবস্থিত। পারি সাঁ-জেরমাঁ ফুটবল ক্লাব ও স্তাদ ফ্রঁসে নামক রাগবি ক্লাব প্যারিসভিত্তিক ক্রীড়া সংগঠন। প্যারিসের ঠিক উত্তরে সাঁ-দ্যনি শহরে আছে ৮১ হাজার আসনবিশিষ্ট স্তাদ দ্য ফ্রঁস ক্রীড়াক্ষেত্র (স্টেডিয়াম), যা ১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপের সময় নির্মাণ করা হয়। প্যারিসে প্রতি বছর রোলঁ-গারো কোর্টের লালবর্ণ মাটিতে ফরাসি ওপেন নাম টেনিসের গ্র্যান্ড স্ল্যাম স্তরের প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয়। প্যারিস ১৯০০ ও ১৯২৪ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের আয়োজন করে এবং ঠিক একশত বছর পরে ২০২৪ সালে আবারও অলিম্পিকের আয়োজক নগরীর মর্যাদা পায়। এখানে ১৯৩৮ ও ১৯৯৮ সালে ফিফা বিশ্বকাপ, ২০১৯ সালের ফিফা নারী বিশ্বকাপ, ২০০৭ সালের রাগবি বিশ্বকাপ, ১৯৬০ সালে ইউরোপিয়ান নেশনস কাপ, ১৯৮৪ সালের উয়েফা কাও, ও ২০১৬ সালের ইউরো কাপের শিরোপা-নির্ধারণী খেলাগুলি আয়োজিত হয়। প্রতি জুলাই মাসে “তুর দ্য ফ্রঁস” নামক বাইসাইকেল প্রতিযোগিতাটি প্যারিসের শঁজেলিজে রাজপথে গিয়ে শেষ হয়।

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য

হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির শহর এটি । জাদুঘরের শহর , বিশ্বের ফ্যাশন জগতের রাজধানী এবং কেনাকাটার জন্য সুবিখ্যাত। আলোর শহরও এটি ।

পর্যটন

বিশ্বের সবচেয়ে বেশীসংখ্যক পর্যটকের গন্তব্যস্থল প্যারিস; প্রতি বছর এখানে প্রায় ৩ কোটি বিদেশী পর্যটক বেড়াতে আসেন। শহরটির অনেক উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে রয়েছে আইফেল টাওয়ার, নোত্র্‌ দাম দ্য পারি, শঁজেলিজে সড়ক, আর্ক দ্য ত্রিয়োম্‌ফ, বাজিলিক দ্যু সাক্রে ক্যর, লেজাভালিদ্‌, পন্তেওঁ, গ্রঁদ আর্শ, পালে গার্নিয়ে, লুভ্‌র জাদুঘর, ম্যুজে দর্সে, ম্যুজে নাসিওনাল দার মোদের্ন ইত্যাদি।


খেলাধুলা

স্তাদ দ্য ফ্রান্স ৮২,০০০ আসন বিশিষ্ট শহরের প্রধান ও দেশের জাতীয় স্টেডিয়াম বা ক্রীড়া-ময়দান। এটি ইউরোপের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম ক্রীড়া-ময়দান। এছাড়া পার্ক দে প্রাঁস শহরের আরেকটি অন্যতম ক্রীড়া-ময়দান। বিখ্যাত ফুটবল ক্লাব পারি সাঁ জেরমাঁ-র ঘরের মাঠ এটি।

পরিবহন

বিমান পরিবহন

শার্ল দ্য গোল বিমানবন্দর প্যারিস শহর ছাড়াও সমগ্র ফ্রান্সের প্রধান, বৃহত্তম ও ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এছাড়াও আছে অর্লি বিমানবন্দর ও বোভে-তিলে বিমানবন্দর নামের আরও দুইটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। পারি লো-বুর্জে বিমানবন্দর ঐতিহাসিকভাবে প্যারিসের প্রাচীনতম বিমানবন্দর এবং শহরের কেন্দ্রের সবচেয়ে কাছে অবস্থিত হলেও এটি বর্তমানে ব্যক্তিগত বিমান সেবার জন্য ব্যবহার করা হয়।

আন্তর্জাতিক সংস্থা

জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা তথা ইউনেস্কোর সদর দপ্তর এই শহরে অবস্থিত।

Collection James Bond 007

প্রাসঙ্গিক নিবন্ধসমূহ

  • প্যারিসের আকর্ষণীয় স্থানসমূহ

পাদটীকা ও তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

  • Official Paris website
  • কার্লিতে Paris (ইংরেজি)

Text submitted to CC-BY-SA license. Source: প্যারিস by Wikipedia (Historical)


Langue des articles



INVESTIGATION

Quelques articles à proximité