Aller au contenu principal

রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি


রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি


আবু মাসুদ রশিদ আহমেদ ইবনে হিদায়াত আহমাদ আইয়ুবি আনসারি রামপুরি গাঙ্গুহী (উর্দু: ابو مسعود رشید احمد بن ہدایت احمد ایوبی انصاری رامپوری گنگوہی‎‎; আরবি: رشيد أحمد الكنكوهي, Rashīd Aḥmad al-Kankūhī; ১০ মে ১৮২৯ – ১১ আগস্ট ১৯০৫) ছিলেন ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত ও সুফি। তিনি দেওবন্দ মাদ্রাসা কেন্দ্রিক দেওবন্দি ভাবধারার ইসলামি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির মৃত্যুর পর তিনি দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রধান নিযুক্ত হন। রশিদ আহমেদ গাঙ্গোহি ও মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি দুজনেই দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা এবং হাজি ইমদাদউল্লাহ মুহাজির মাক্কির কাছে সুফিবাদ শিক্ষালাভ করেন।

তিনি ফিকহ ও সুফিবাদের উপর প্রায় ১৪টি বই লিখেছেন। এর মধ্যে ফতোয়া রাশিদিয়া ও হিদায়াতুশ শিয়া অন্যতম। তার অনুসারীরা তাকে একজন আলেম, হাকিম এবং শরিয়া আইন ও সুফি তরিকার ক্ষেত্রে অনুসরণীয় হিসেবে দেখে থাকে।

জন্ম

রশিদ আহমদ ১২৪৪ হিজরিতে (১৮২৬ খ্রিষ্টাব্দ) ব্রিটিশ ভারতের সাহারানপুর জেলার গাঙ্গোহে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মস্থান আবদুল কুদ্দুস গাঙ্গোহীর সমাধির নিকটে অবস্থিত। তার পিতা মাওলানা হিদায়াত আহমদ এবং মা করিমুন নিসা উভয়ই আনসারী আইয়ুবী পরিবারের সদস্য ছিলেন। তাঁর পৈতৃক গ্রাম ছিল রামপুর, তবে তাঁর দাদা কাজী পীর বখশ গাঙ্গোহে বসতি স্থাপন করেছিলেন।

শিক্ষা জীবন

জাহেরি ও বাতেনি শিক্ষা: তাঁর সর্ব প্রথম শিক্ষক ছিলেন মিয়াঁজী কুতুব বখশ গাংগুহি (রহ.)। তাঁর কাছেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং এই সময়েই তিনি স্বীয় উস্তাদের মুখে নিজের স্মৃতিশক্তি ও মেধার প্রশংসা শুনেন।

তিনি কুরআনুল কারীম কোথায় শিক্ষা লাভ করেছেন তা জানা যায় না।খুব সম্ভব বাড়িতে থেকেই তাঁর আম্মাজানের নিকট তিনি তা শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ফার্সি শিক্ষা লাভ করেন কর্ণালে স্বীয় মামু মাওলানা মুহাম্মদ তাকী সাহেবের কাছে। আর কিছু অংশ মৌলভী মুহাম্মদ গাওছ সাহেবের কাছে। আরবী ব্যাকরণ (نحو صرف) নাহু সরফ এর প্রাথমিক গ্রন্থ গুলি মৌলভী মুহাম্মদ বখশ রামপুরী সাহেবের কাছে পড়েন এবং তারই অনুপ্রেরণার ফলে ১২৬১ হিজরীতে আরো বেশি 'ইলম শিক্ষার জন্য দিল্লি চলে যান। দিল্লি পৌঁছে তিনি বিভিন্ন উস্তাদের দরসে শরিক হন এবং প্রত্যেক দরসের ভাব ও পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ করেন; কিন্তু কোথাও তার মন স্থির হয়ে থাকতে চাচ্ছিল না। এদিকে ঘটনা ক্রমে এবং আল্লাহর কুদরতে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ওস্তাদ হযরত মাওলানা মামলুক আলী সাহেব হিজায সফর থেকে প্রত্যাবর্তনের পথে দিল্লি হয়ে নানুতা যান। এখানে বিরতির দিন শেষ হবার পর হযরত মাওলানা কাসিম সাহেবকে তিনি পড়াবার জন্য নিজের সঙ্গে করে দিল্লিতে নিয়ে যান। এটা ছিল ১২৬০ হিজরীর ঘটনা। হযরত ইমামে রব্বানী যিনি এখনো মনস্থির না হবার কারণে নিজের শিক্ষা শুরু করতে পারছিলেন না, তিনিও হযরত মাওলানা মামলুক আলী সাহেবের খেদমতে পৌঁছে গেলেন। এমনিভাবে ইলম ও তাকওয়ার এই দুই চন্দ্র সূর্য একি ওস্তাদের তত্ত্বাবধানে ইল্মে জাহেরীতে পূর্ণতা লাভে মশগুল হয়ে গেলেন হযরত ইমামে রাব্বানী হযরত মাওলানা মামলুক আলী সাহেবের সামনে 'সদরা শামসে বাযেগা' এমনভাবে পড়তেন, যেমন করে হাফেজ সাহেবান কুরআন শরীফ পড়েন। মোটকথা কয়েক বছর তিনি দিল্লি অবস্থান করে পাঠ্যপুস্তক এর জ্ঞান লাভ সমাপন করেন। যুক্তিবিদ্যায় তার আরও একজন ওস্তাদ ছিলেন আল্লামাতুশ শাহির মুফতি সদর উদ্দিন সাহেব। কাজী আহমাদউদ্দিন সাহেবের কাছ থেকেও তিনি শিক্ষা লাভ করেন। তার হাদিসের উস্তাদ ছিলেন হযরত মাওলানা আলহাজ্ব শাহ আব্দুল গনি সাহেব মুহাজিরে মাদানী মুজাদ্দেদী নকশেবন্দী(র)। তিনি এত মনোযোগ ও একাগ্রতার সাথে কেতাব সমূহ অধ্যয়ন করতেন যে, খানাপিনা এবং ঘুমের জন্য সর্বমোট মাত্র ৭ ঘন্টা ব্যয় করেন। লেখাপড়া শেষ করার পর তিনি তার প্রিয় জন্মভূমির উদ্দেশ্যে রওনা হন। তখন তার বয়স ছিল প্রায় ২১ বছর। দিল্লিতে যতদিন ছিলেন নিজের খানাপিনার ব্যবস্থা তিনি নিজেই করতেন, কারোর উপর বোঝা চাপান নি। তাঁর আম্মাজান প্রতি মাসে ৩ টাকা করে পাঠাতেন এবং তা দিয়েই তিনি যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করতেন।

তথ্যসূত্র

  • http://www.haqislam.org/maulana-rashid-ahmad-gangohi/
  • http://www.deoband.org/2010/06/history/letters/haji-imdadullah-on-mawlana-rashid-ahmad-gangohi-part-two/

গ্রন্থপঞ্জি

  • আল-গাজ্জালী, মুহাম্মদ (১৯৯৬)। GENGÛHÎ, Reşîd Ahmedটিডিবি এনসাক্লোপিডিয়া অব ইসলাম (তুর্কি ভাষায়)। ১৪। ইস্তাম্বুল, তুরস্ক: ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর। পৃষ্ঠা ২৪–২৫। আইএসবিএন 9789753894142। 
  • আজমী, নূর মুহাম্মদ (২০০৮)। হাদিসের তত্ত্ব ও ইতিহাস। বাংলাবাজার, ঢাকা: এমদাদিয়া পুস্তকালয়। পৃষ্ঠা ১৭০। 
  • নূরুর রহমান, মাওলানা (২০১০)। তাযকেরাতুল আওলিয়া-৫। ঢাকা, বাংলাদেশ: এমদাদিয়া পুস্তকালয় (প্রাঃ) লিমিটেড। পৃষ্ঠা ২৪২। 
  • নকশবন্দী, জুলফিকার আহমদ (২০১৫)। আকাবিরের ঈমানদীপ্ত জীবন চরিত। রায়পুরী, এনামুল হক কর্তৃক অনূদিত। বাংলাবাজার, ঢাকা: মক্কা প্রকাশন। পৃষ্ঠা ৬৭। 
  • মুফতী মুঈনুদ্দীন, আবু নাঈম (এপ্রিল ২০১৩)। "ইমামে রব্বানী হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ গাংগুহী রহ."। মাসিক আল আবরার। বসুন্ধরা, ঢাকা: মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ: ৩১,৩২,৩৩। ২৬ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  • শাকির, উবায়দুল্লাহ (২০১৬)। আকাবিরে উম্মাতের সোনালী জীবন। বাংলাবাজার, ঢাকা: আশরাফিয়া বুক হাউজ। পৃষ্ঠা ১৮। 
  • মিরাঠী, আশেকে ইলাহী (২০১৭)। তাযকিরাতুর রশিদ রহ.। বাংলাবাজার, ঢাকা: ফয়েজিয়া কুতুবখানা। আইএসবিএন 9789843425560। 
  • ইমামে রাব্বানি রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি রহ. জীবন সমগ্র
  • খাতুন, আয়েশা (২০১৭)। স্বাধীনতার পর হাদিস সাহিত্যে ভারতের অবদান। ভারত: সুন্নি ধর্মতত্ত্ব বিভাগ, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৮৫–৮৬। hdl:10603/54426। 
  • Yusuf, Aasia (২০১৪)। Islam and modernism: a study of Muslim scholars of Indo-Pak subcontinent (গবেষণাপত্র) (ইংরেজি ভাষায়)। Aligarh Muslim University। পৃষ্ঠা 134–135। উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)

দেখুন


Text submitted to CC-BY-SA license. Source: রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি by Wikipedia (Historical)