![সৈয়দ ফজলুল করিম সৈয়দ ফজলুল করিম](/modules/owlapps_apps/img/nopic.jpg)
সৈয়দ ফজলুল করিম ( ১৯৩৫–২০০৬ খ্রি. ) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি পীর সাহেব চরমোনাই নামে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। ইসলামের আধ্যাত্মিক শিক্ষা চর্চার পাশাপাশি তিনি স্বীয় উস্তাদ মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জীর সাথে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং সেই সময় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সহ-সভাপতি হন। মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জীর মৃত্যুর পর তিনি ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে সমমনা নেতৃত্বস্থানীয় ইসলামপন্থী ব্যক্তি ও দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ (আই এ বি) নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।
সৈয়দ মুহম্মদ ফজলুল করিম ১৯৩৫ সালে বরিশাল জেলার কোতোয়ালী থানাধীন চরমোনাই নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাকও একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং তিনি ছিলেন চরমোনাই তরিকার প্রবর্তক।জানা যায়, তাঁর পূর্বপুরুষ ( দাদার পরদাদা) সৈয়দ আলী আকবর বাগদাদ শহর হতে বাংলায় হিজরত করেন। অবশেষে পশুরীকাঠি গাঁয়ে তারা বসতি স্থাপন করেন। আলী আকবরের ছোট ভাই, যিনি সৈয়দ আলী আসগর নামে পরিচিত, তিনি কীর্তনখোলা নদীর পশ্চিমপাড় জুড়ে অবস্থিত লাকটিয়া গ্রামের সৈয়দ খান্দানের পূর্বপুরুষ।
তিনি পিতার নিকট প্রাথমিক শিক্ষা ও নিজ গ্রাম চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়া বরিশালে মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি ঢাকায় এসে জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগে ভর্তি হন এবং এখান থেকে ১৯৫৭ সালে দাওরায়ে হাদিস পাশ করেন। তার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন: মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী, আজিজুল হক, আব্দুল মজিদ (ঢাকুবী হুজুর), মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ (মুহাদ্দিস সাহেব হুজুর) প্রমুখ। ছাত্রজীবনে তিনি নাছিরে মিল্লাত নামে একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৫৮ সালে চরমোনাই জামিয়া রশীদিয়ায় শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। ১৯৭২ সালে তিনি নিজ পিতার কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে পিতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাকের মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আমীরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সহ সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৭ সালের ১৩ মার্চ তিনি ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলন (বর্তমান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠা করেন।
তসলিমা নাসরিন বিরোধী আন্দোলনে সর্বদলীয়ভাবে গড়ে ওঠা সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়কারীর পদ থেকে উবায়দুল হক পদত্যাগ করলে জোটবদ্ধ শরিক দলসমূহের নেতাদের অনুরোধে তিনি সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়কারীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি হাইকোর্ট ফতোয়া বিরোধী রায় দেয়ায় সর্বস্তরের আলেমদের নেতৃত্বে গঠিত ইসলামি আইন বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে গড়ে ওঠা আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল।
তিনি ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
Owlapps.net - since 2012 - Les chouettes applications du hibou