Aller au contenu principal

চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী


চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী


চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী (১৮৯৪ - ১৯১৫) (ইংরেজি: Chittaprio Roychowdhury) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী। তিনি পূর্ণচন্দ্র দাসের সহকর্মী ও পূর্ণচন্দ্র পরিচালিত গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন মাদারিপুর সমিতির সদস্য ছিলেন। তিনি বিপ্লবী বাঘা যতীনের নেতৃত্বে পরিচালিত বুড়ি বালামের তীরে খণ্ডযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন।

প্রারম্ভিক জীবন

চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ৬ ডিসেম্বরে মাদারিপুরের রাজৈর উপজেলাধীন খালিয়া গ্রামে এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম পঞ্চানন রায়চৌধুরী এবং মাতার নাম সুখদা সুন্দরী দেবী। পিতা পঞ্চানন রায়চৌধুরী মাদারিপুর শহরে অনারারী ম্যাজিস্ট্রট ছিলেন। চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী প্রথমে থালিয়া হাই স্কুলে এবং পরে মাদারিপুর হাই স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় মাদারিপুর সমিতির (১৯১০ খ্রি.) বিপ্লবী সদস্য হয়েছিলেন।

বিপ্লবী কর্মকাণ্ড

ডিসেম্বর ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ফরিদপুর ষড়যন্ত্র মামলায় আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হয়ে পাঁচ মাস জেল খাটেন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯১৫ তারিখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন দিবসে রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিস ইনস্পেকটর সুরেশ মুখার্জিকে কয়েকজন সহকর্মীর সাহায্যে হত্যা করেন। বিপ্লবী যতীন মুখার্জীর সহকর্মী হিসেবে জার্মানি, জাপান, আমেরিকা ও ডাচ ইন্ডিজ থেকে অস্ত্রশস্ত্র আমদানির চেষ্টা করেন।

বুড়ি বালামের তীরে খণ্ডযুদ্ধ

১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাত্রে বাঘা যতীন বা যতীন মুখার্জী নিজের সাময়িক আস্তানা মহলডিহাতে ফিরে এলেন। সঙ্গে চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী, জ্যোতিষচন্দ্র পাল, মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত এবং নীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত। ৮ সেপ্টেম্বর সারাদিন কেটে গেল গভীর জংগলে। সারারাত পায়ে হেঁটে ৯ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা পৌঁছলেন বালেশ্বরের বলরামগড়িতে বুড়িবালাম (উড়িষ্যায় একে বলে "বুড্ঢাবালাঙ্গ") নদীর উপকণ্ঠে। সাঁতার কেটে নদীর ওপারে গিয়ে যুদ্ধের পক্ষে মোটামুটি উপযুক্ত শুকনো এক ডোবার মধ্যে আশ্রয় নিলেন। বিপরীত পক্ষে চার্লস টেগার্ট, কমান্ডার রাদারফোর্ড, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কিলভি অসংখ্য সশস্ত্র পুলিস ও সামরিক বাহিনী নিয়ে হাজির হয়েছিল। পরিখার আড়ালে বাঘা যতীনের নেতৃত্বে পাঁচজন, হাতে মাউজার পিস্তল। যুদ্ধ শুরু হলে পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে শহীদ হলেন চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী। পরে ১৯১৫ সালের ১৬ অক্টোবর বিচারের রায়ে মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত এবং নীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তকে প্রাণদণ্ড দেয়া হয়। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে ৩ ডিসেম্বর তাদের দুজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। জ্যোতিষচন্দ্র পাল ও বেশিদিন বাঁচেননি। পুলিশের নির্মম অত্যাচারে আন্দামান সেলুলার জেলে কুঠরিবদ্ধ অবস্থায় উন্মাদ হয়ে যান। বহরমপুর উন্মাদ আশ্রমে ১৯২৪ সালের ৪ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু ঘটে।

তথ্যসূত্র


Text submitted to CC-BY-SA license. Source: চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী by Wikipedia (Historical)


ghbass