Aller au contenu principal

এ কে এম ইসহাক


এ কে এম ইসহাক


এ কে এম ইসহাক (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ২০১০) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

এ কে এম ইসহাকের জন্ম যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার ধল গ্রামে। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তার বাবার নাম মুজিবুর রহমান এবং মায়ের নাম মাহমুদা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম লুৎফুন্নেছা ইসহাক। তাদের ছয় ছেলে।

কর্মজীবন

এ কে এম ইসহাক প্রকৌশলী হিসেবে ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন রাঙামাটি জেলার চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী পেপার মিলে। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকা ও চট্টগ্রামে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে দেশের প্রত্যন্ত এলাকা চন্দ্রঘোনায়ও সে খবর ২৬ মার্চ পৌঁছে যায়। ২৫ মার্চের আগেই সেখানে তার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল সংগ্রাম কমিটি ও ছাত্র-যুবকদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী পেপার মিল ও রেয়ন মিলের নিরাপত্তা বিভাগে ছিল দেড় শতাধিক থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও বন্দুক। পরে এ কে এম ইসহাক এরপর সীমান্ত অতিক্রম করে চলে যান ভারতে। সাবরুম থেকে সাত কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে হরিণা নামক পাহাড়ি এলাকায় তারা ক্যাম্প স্থাপন করেন। পরে সেই ক্যাম্পই ১ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টারে রূপ নেয়। সেখানে শুরু হয় দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম। জুলাই মাসে মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে এ কে এম ইসহাককে ১ নম্বর সেক্টরের কোয়ার্টার মাস্টার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এই দায়িত্ব পেয়ে তিনি মুক্তিবাহিনীর জন্য যোদ্ধা সংগ্রহ, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি কাজ যথেষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নিপুণভাবে সম্পন্ন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

এ কে এম ইসহাক ২৬ মার্চ বিভিন্ন অস্ত্র প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে বিতরণ করেন। তারপর ২৭ মার্চ কাপ্তাইয়ের মদনা ঘাটে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের দলনেতা মাহফুজুর রহমানের (বীর বিক্রম) সঙ্গে দেখা করে প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দেন। ইসহাক তার স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়ে অবস্থান নেন মদনা ঘাট-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী স্থানে। এপ্রিল মাসে তিনি বেশ কয়েকটি যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন। ১৩ এপ্রিল কালুরঘাটের পতন হলে তিনি তার দল নিয়ে সমবেত হন খাগড়াছড়িতে। সেখানে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, মীর শওকত আলীর (বীর উত্তম) সার্বিক কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা মহালছড়িতে অবস্থান নিয়ে রাঙামাটি-বরকল ও রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করবেন। এ কে এম ইসহাকের ওপর দায়িত্ব পড়ে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিরোধ করার। তিনি তার দল নিয়ে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে বেশ কয়েকবার অ্যামবুশ করেন। এই অ্যামবুশে হতাহত হয় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা। ২৭ এপ্রিল মহালছড়িতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল ও তাদের সহযোগী সশস্ত্র মিজোদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। ভয়াবহ এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর আফতাবুল কাদের (বীর উত্তম)সহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ দিন যুদ্ধে এ কে এম ইসহাক ও তার দলের মুক্তিযোদ্ধারা বেশ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। তারা পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী সশস্ত্র মিজোদের অনেককে হতাহত করতে সক্ষম হন। তা সত্ত্বেও তারা সেখানে টিকতে পারেননি। কারণ, পাকিস্তানি সেনা ও সশস্ত্র মিজো মিলে সংখ্যায় ছিল অনেক। পরে তারা অবস্থান নেন রামগড়ে। সেখানে ২ মে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ চেষ্টা করেও রামগড় ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। রামগড় পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ কে এম ইসহাকের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব।

পুরস্কার ও সম্মাননা

  • বীর প্রতীক

তথ্যসূত্র

Collection James Bond 007

বহি:সংযোগ


Text submitted to CC-BY-SA license. Source: এ কে এম ইসহাক by Wikipedia (Historical)