Aller au contenu principal

খুনিয়া দিঘী বধ্যভূমি


খুনিয়া দিঘী বধ্যভূমি


বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বধ্যভূমি খুনিয়া দীঘি বধ্যভূমি ঠাকুরগাঁও জেলা সদর থেকে ৪৫ কিমিঃ দূরে রানীশংকৈল উপজেলার ভান্ডারা গ্রামে অবস্থিত।

দীঘির নামকরণ

প্রচলিত আছে, প্রায় দুইশত বছর আগে স্থানীয় এক জমিদার ৬ একরের বিশাল এই দীঘিটি খনন করেন। এই এলাকার ব্যবসায়ীরা নির্জন ও জঙ্গলাকীর্ণ দীঘির পাশ দিয়েই ব্যবসা করতে যেতেন রায়গঞ্জে। একবার কে বা কারা এক ব্যবসায়ীকে খুন করে দীঘির পাড়ে ফেলে রেখেছিল। তখন থেকে এই দীঘির নাম হয়ে যায় খুনিয়া দীঘি।

খুনিয়া দীঘি বধ্যভূমির ইতিহাস

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বর্তমান ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্তবর্তী হরিপুর উপজেলা, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা, রানীশংকৈল উপজেলা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে দিশেহারা হয়ে, পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী রানীশংকৈলে ক্যাম্প স্থাপন করে। প্রতিদিন শত শত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের লোকদের ধরে আনা হতো রানীশংকৈল আর্মি ক্যাম্পে। সেখানে বর্বর নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করার পরে, লাশ গুলোকে খুনিয়া দীঘিতে ফেলে দেওয়া হতো ।

মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সহায়তা করার জন্য রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রহমান ও তার সহোদরকে খুনিয়া দীঘির পাড়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয় । দীঘি পাড়ের শিমুল গাছে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের তালুতে লোহার পেরেক মেরে ঝুলিয়ে রেখে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করতো। কখনো কখনো হত্যার পূর্বে লোকজনকে কবর খুঁড়তে বাধ্য করতো। হত্যার পরে দীঘির পাড়ের উঁচু জমিতে মাটি চাপা দিতো ।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি আর্মি রাজাকার, আলবদর আর আলশামসেদের সহায়তায় ২০০০ জন থেকে ৩০০০ জন মানুষকে খুনিয়া দীঘিতে হত্যা করে। এর ফলে মানুষের রক্তে দীঘির পানির রং হয়ে যায় ঘন খয়েরি। রক্ত, লাশ, কঙ্কালে ভরপুর খুনিয়া দীঘি নামটি আরো সার্থক হয়ে উঠে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দীঘি থেকে উদ্ধার করা মানুষের হাড়গোড় দীঘির পাড়ে একটি গর্ত করে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শহীদদের স্মরণে দীঘি পাড়ের ওই জায়গাটিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৩ সালে জাতীয় চার নেতার মধ্যে অন্যতম আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন।

তথ্যসূত্র


Text submitted to CC-BY-SA license. Source: খুনিয়া দিঘী বধ্যভূমি by Wikipedia (Historical)